হিন্দু ধর্মে তুলসী গাছের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। তুলসীকে শুদ্ধ ও পবিত্র মনে করা হয়। তুলসী বিষ্ণুর অত্যন্ত প্রিয়। তাই বিষ্ণুর পুজোয় তুলসী অত্যাবশ্যকীয়। তুলসী ছাড়া একাধিক পুজো সম্পন্ন হয় না, বিশেষত বিষ্ণুর পুজো।
ভারতে প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদ ওষুধ প্রস্তুতিতে তুলসীর ব্যবহার হয়ে আসছে। তুলসী কথার অর্থ হল যার তুলনা নেই। আয়ুর্বদের নানা গ্রন্থ, বিশেষত চরক সংহিতা ও শুশ্রুত সংহিতায় তুলসীকে সুরসা নামে উল্লেখ করা হয়েছে। ইংরেজিতে তুলসীর নাম ইন্ডিয়ান বেসিল বা হোলি বেসিল। তবে যে শুধু আয়ুর্বেদ ওষুধ প্রস্তুতিতেই তুলসীর ব্যবহার হয় এমন নয়। হোমিওপ্যাথিতেও তুলসীর ব্যবহার রয়েছে।
হিন্দু ধর্মে তুলসী গাছকে ঈশ্বরের রূপ দেওয়া হয়েছে। সকাল-সন্ধ্যা তুলসী গাছের গোড়ায় জল দেওয়া ও প্রদীপ জ্বালানো নিয়ম। কথিত আছে যে তুলসী গাছে দেবী লক্ষ্মীর বাস। তুলসীর মালা দিয়ে ভগবান বিষ্ণুর মন্ত্র জপ খুব ফলদায়ক বলেও মনে করা হয়। বলা হয় যে তুলসীর মালা দিয়ে জপ করলে ভগবান শ্রী হরি দ্রুত প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের সমস্ত ইচ্ছা পূরণ করেন।
তুলসী মালা ধারণের লাভ

- তুলসী গাছ যে ভাবে পরিবারে সুখ-সৌভাগ্যে বৃদ্ধি ঘটায়, তেমনই তুলসী মালা ধারণ করলে ব্যক্তির মন ও মস্তিষ্ক ইতিবাচক শক্তিতে ভরে ওঠে।
- এই মালা ধারণ করলে গ্রহ মজবুত হবে। কোনও রাশির জন্মকোষ্ঠীতে বুধ ও বৃহস্পতি দুর্বল পরিস্থিতিতে থাকলে অবশ্যই তুলসী মালা ধারণ করবেন।
- তুলসী মালা ধারণ করলে লক্ষ্মী, নারায়ণ ও কৃষ্ণের বিশেষ আশীর্বাদ লাভ করা যায়।
কাদের তুলসীর মালা পরা উচিত নয়
যদি তুলসীর জপমালা পরার কথা ভাবেন, তাহলে বেশ কিছু নিয়ম জেনে নেওয়া উচিত। যদি এই জপমালা পরে থাকেন তবে মাংস ও অ্যালকোহল জাতীয় কোনও খাবারই খাওয়া এড়ানো উচিত। এর পাশাপাশি তামসিক খাবারও এড়িয়ে চলা উচিত। এই অবস্থায় সাত্ত্বিক খাবার খাওয়া উচিত।
যে ব্যক্তি তুলসীর জপমালা পরেছেন তাদের যেন ভুল করেও রুদ্রাক্ষ জপমালা পরা উচিত নয়। অন্যথায় ব্যক্তিকে বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন হতে পারে।
তুলসীর মালা পরার আগে জেনে নিন নিয়ম

শ্রীগুরুর পুরাণে বলা হয়েছে, ”যে ব্যাক্তি তুলসী কাষ্ঠময়ী মালা শ্রীহরির চরণে নিবেদন পূর্বক ভক্তিসহকারে কণ্ঠে ধারন করেন, তার কোন পাপ বিদ্যামান থাকে না । শ্রীকৃষ্ণ তার প্রতি নিরন্তর সন্তুষ্ট থাকেন ।”
তুলসী মালা শ্রীকৃষ্ণচরণে নিবেদন পূর্বক মাথায় স্পর্শ করে প্রার্থনা করতে হয়,— “হে মালা, তুমি কৃষ্ণবল্লভা, কৃষ্ণভক্তেরা তোমাতে প্রীতি প্রদর্শন করেন, আমি তোমাকে কণ্ঠে ধারন করছি, দয়া করে আমাকে শ্রীহরির এবং তার ভক্তগণের প্রিয়পাত্র কর ।”
যারা তুলসীর মালা পরবেন তাদেরকে মাংস এবং অ্যালকোহল একেবারেই বর্জন করতে হবে। তুলসী কাঠের মালা পরলে সাত্ত্বিক খাবার খেতে হয় । মাছ, মাংস, রসুন, পেঁয়াজ, ডিম ইত্যাদি খাওয়া যায় না। তুলসীর মালা যারা পরেন তাদেরকে প্রতিদিনই বিষ্ণু মন্ত্র জপ করতে হয় ।
যখন ইচ্ছে হল তুলসীর মালা পরলাম এবং যখন ইচ্ছা হল সেটি খুলে রেখে দিলাম, এমনটা করা যায় না। তুলসীর মালা পরার আগে সেটাকে গঙ্গা জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হয় । আর তারপর জল শুকিয়ে গেলে মালাটি পরতে হয়।
যিনি রুদ্রাক্ষের মালা পরে রয়েছেন তিনি একসঙ্গে তুলসীর মালা পরতে পারবেন না। এটাকে অশুভ বলে মনে করা হয়। অনেকেই এমন রয়েছেন যাদের গলায় কোন মালা পরতে অসুবিধা হয়। সে ক্ষেত্রে তুলসীর মালাতেও সেই একই ধরনের সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। কাজেই তাঁরা চাইলে ডান হাতে তুলসীর মালা মুড়ে রাখতে পারেন।
প্রতিদিন প্রত্যেকটি মানুষেরই কিছু রুটিন মাফিক কাজ থাকে। সেই কাজগুলি করার সময় নিজের মালাটিকে খুলে পবিত্র কোন জায়গায় রাখতে হবে। আবার গঙ্গা জল দিয়ে ধুয়ে তারপরে পরিধান করতে হবে।
তুলসীমালা ধারণ মন্ত্র
তুলসী কাষ্ঠসম্ভুতং মাল্যং। কুজ্ঞজনপ্রিয়ং।
বিভর্মি ত্বামহং কণ্ঠে কুরু মাং কৃষ্ণবল্লভং।।
তথা মাং কুরুদেবেশি! নিত্যং বিষ্ণুজন-প্রিয়:।।
দানে লা ধাতরদ্বিষ্টো লাসি মাং হরিবল্লভে।
ভক্তেভ্যশ্চ সমস্তেভাস্তেন মালা নিগদ্যসে।।
তুলসী মালা-মাহাত্ম্য
তুলসীকাষ্ঠমালঞ্চ কণ্ঠস্থাং লহতে তু য:।
অপাশৌচোহপ্য নাচারো মানব: শুচিরের চ।। (তথাহি হরিভক্তিবিলাসে)
অপবিত্র অনাচারী হয় যেই জন।
তুলসীর মাল্য কণ্ঠে করয়ে ধারণ।।
দেহস্থিত পাপ তার কভু নাহি রয়।
অশুচি হইবে শুচি শাস্ত্রে হেন কয়।।
তুলসীর মালা কণ্ঠে ধারণ করিয়া।
জনার্দ্দন পূজে কেহ ভক্তিযুক্ত হৈয়া।।
অযুত সংখ্যক ধেনু দানে যেই ফল।
সেইমত লভিবেক অবশ্য সুফল।
তুলসীর মালা কণ্ঠে থাকায়ে যাহার।
দৈত্যনিসুদন হরি হরে পাপ তার।।
তুলসীর মালা থাকে বহু কিংবা শিরে।
যোজনের পথে থাকি কৃজ্ঞ তারে হেরে।।
অশৌচ কি প্রায়শ্চিত্ত নাহি তার দেহে।
শমনের ভয় তার সদ্য দূরে রহে।।
কণ্ঠে তুলসীর মালা করিয়া ধারণ।
দৈব কিংবা পিতৃকার্য্য করে সম্পাদন।।
যমরাজে ভয় তার না রহে কখন।
আপনি করয়ে কৃপা দেব নারায়ণ।।
রোপন লেপন আর দর্শন স্পর্শন।
ধেয়ান প্রণাম আর শ্রবণ কীর্ত্তন।।
পূজন সহিত করে নববিধা ভক্তি।
পুনর্জ্জন্ম নাহি তার অবশ্যই মুক্তি।।
তুলসী মাহাত্ম্যা কথা করিনু বর্ণন।
মনযোগ দিয়া শুন যত ভক্তগণ।
এবে কহি শুন সবে মালা বিবরণ।
মালার উৎপত্তি আর মালার গ্রন্থন।।
তুলসীর মালা পরতে কোন শাস্ত্রে বলা হয়েছে?

জ্যোতিষশাস্ত্রে তুলসীর মালা পরা নিয়ে অনেক নিয়মের কথা বলা হয়েছে। যদি একবার তুলসীর মালা পরিয়ে থাকেন। ভুল করেও বারবার সরানো উচিত নয়।
ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে বলা হয়েছে,—
তুলসীকাষ্ঠনির্মাণমালাং গৃহ্নাতি যো নরঃ।
পদে পদেহশ্বমেধস্য লভতে নিশ্চিতং ফলম্।। (ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, প্রকৃতিখন্ড-২১.৪৭)“
যে নর তুলসীকাষ্ঠ-নির্মিত মালা ধারণ করবেন, নিশ্চয়ই তাঁর পদে পদে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল হবে।”
স্কন্দপুরাণে বলা হয়েছে,—
“ভগবান বললেন, যে মানব তুলসীকাষ্ঠ-সম্ভূত মাল্য ধারণ করেন, আমি প্রত্যহ তাকে দ্বারকাবাসের ফল পদান করি। যে নর ভক্তিসহকারে আমার উদ্দেশ্যে তুলসীকাষ্ঠ-সম্ভুত মাল্য প্রদান করে ভক্তিপূর্বক তা গ্রহণ করেন, তার কোনো পাতক নেই, তার প্রতি আমি অত্যন্ত প্রীত এবং তিনি আমার প্রাণ সদৃশ। যিনি তুলসীকাষ্ঠ-সম্ভুত মাল্যে ভূষিত হয়ে পিতৃ ও দেবগণের পূজা প্রভৃতি পুণ্য কার্য করেন, তার কোটিগুণ পূণ্য হয়ে থাকে।
তুলসীকাষ্ঠমালাং তু প্রেতরাজস্য দূতকাঃ।
দৃষ্টা নশ্যতি দূরেণ বাতোদ্ধূতং যথা দলং।।১২।।
তুলসীকাষ্ঠমালাভির্ভূষিতো ভ্রমতে ভুবি।
দুঃস্বপ্নং দুর্নিমিত্তঞ্চ ন ভয়ং শত্রুবৎ ক্বচিৎ।।১৪।।
যমদূতগণ তুলসীকাষ্ঠসম্ভূত মাল্য দর্শন করে বায়ুচলিত পত্রের ন্যায় দূর হতে পলায়ন করে। যিনি তুলসীকাষ্ঠ মাল্যে ভূষিত হয়ে বসুধা বিচরণ করেন, কখনো তাঁর দুঃস্বপ্ন, দুর্নিমিত্ত বা শত্রুজনিত ভয় থাকে না।
ধারয়ন্তি ন যে মালাং হৈতুকাঃ পাপবৃদ্ধয়ঃ।
নরকান্ন নিবর্তন্তে দগ্ধা কোপাগ্নিনা মম।।১৫।।
যেসকল হেতুবাদী পাপবুদ্ধি লোক তুলসীমালা ধারণ করে না, আমার কোপাগ্নি দ্বারা দগ্ধ হয়ে তারা কখনো নরক হতে প্রতিনিবৃত্ত হয় না। অতএব, তুলসীমাল্য ধারণ করবে।” (স্কন্দপুরাণ, বিষ্ণুখন্ড, মার্গশীর্ষমাসমাহাত্ম্য, ৪.৭-১৫)।
পদ্মপুরানে বলা হয়েছে,—
তুলসী কাষ্ঠের মহিমা প্রসঙ্গে পদ্মপুরাণে (উত্তরখন্ডে অধ্যায় ২৩) বলা হয়েছে-“তুলসী মাষ্ঠানলে যাদের দেহ দগ্ধ হয় এবং মৃতব্যক্তির সর্বাঙ্গে তুলসীকাষ্ঠ দিয়ে পশ্চাৎ যে ব্যক্তি তাকে দাহ করেন, তারা সকলেই পাপ হতে মুক্ত হয়ে থাকে।”
তুলসীকাষ্ঠমালাস্তু কণ্ঠস্থাং বহতে তু যঃ।
অপ্যশৌচহপ্যনাচারো ভক্ত্যা যাতি হরের্গৃহম্।। (পদ্ধপুরাণ, স্বর্গখন্ড, ৪৭.৪৫)
“যে তুলসীকাষ্ঠমালা কন্ঠস্থ করে বহন করে, সে অশৌচ বা অনাচার হলেও হরির গৃহে (বৈকুন্ঠে) যায়।”
যঃ পুনস্তুলসীমালাং কন্ঠে কৃত্বা জনার্দনম্।
পূজয়েৎ পুণ্যমাপ্নোতি প্রতিপুষ্পং গবাযুতম্।।৪৮।।
ধারয়ন্তি ন যে মালাং হৈতুকাঃ পাপবুদ্ধয়ঃ।
নরকান্ন নিবর্তন্তে দগ্ধা কোপগ্নিনা হরেঃ।।৪৯।।“
যে মানব তুলসীমালা কন্ঠে করে জনার্দনের পূজা করে, সে প্রতি পুষ্পে গবাযুতের (অযুত গোদানের) পুণ্য প্রাপ্ত হয়। যেসকল পাপবুদ্ধি ব্যক্তি নানা কারণ দর্শিয়ে তুলসীমালা ধারণ করে না, তারা হরির কোপাগ্নিতে দগ্ধ হয়ে নরক হতে প্রত্যাবৃত হতে পারে না।
শ্রীল ব্যাসদেব পদ্মপুরানে এই সত্য লিখেছেন এতে কোনো সন্দেহ থাকতে পারেনা।
গলায় তুলসীমালা কেন তিন প্যাঁচ দিয়ে পরতে হয়?

শাস্ত্র-সম্মতভাবে গলায় তিন প্যাঁচ দিয়েই তুলসী মালা ধারণ করা কর্তব্য, কারণ স্মৃতিশাস্ত্রে তিন প্যাঁচ দিয়ে তুলসীমালা ধারণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
তিন প্যাঁচ দিয়ে তুলসী মালা ধারণ করার সময় তিনটি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হয়,
- প্রথম প্যাঁচ দিয়ে বলতে হয় “আমি নিজেকে উদ্ধার করিব হরিনামের দ্বারা।”
- দ্বিতীয় প্যাঁচ দিয়ে বলতে হয়–“আমি আমার পরিবারকে উদ্ধার করিব হরিনামের দ্বারা।”
- তৃতীয় প্যাঁচ দিয়ে বলতে হয়,”আমি যাহাকে দেখিব, তাহাকে বলিব হরিনাম, উদ্ধার হইবে সে হরিনামের দ্বারা।”
তুলসীমালার প্রথম প্যাঁচে নির্দেশ করে “সম্বন্ধ তত্ত্ব” অর্থাৎ “জীবের স্বরূপ হয় কৃষ্ণের নিত্য দাস”। কৃষ্ণের সঙ্গে যে আমার নিত্য সম্বন্ধ রয়েছে সেই সম্বন্ধকে স্মরণ করে গভীর প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।
তুলসীমালার দ্বিতীয় প্যাঁচ নির্দেশ করে, “অভিধেয় তত্ত্ব” অর্থাৎ কৃষ্ণের সঙ্গে যে একমাত্র সম্বন্ধ রয়েছে তাকে পাওয়ার একমাত্র উপায় হল “ভক্তি”। সমস্ত বৈদিক শাস্ত্র তাই ভগবদ্ভক্তির পন্থাকে “অভিধেয়” বলে বর্ণনা করা হয়েছে! তাই এই তুলসীর দ্বিতীয় প্যাঁচ দিয়ে আমি যেন সেই ভক্তি লাভ করতে পারি।
তুলসীমালার তৃতীয় প্যাঁচ নির্দেশ করে, “প্রয়োজন তত্ত্ব”। সমস্ত জীবের একমাত্র প্রয়োজন হল “কৃষ্ণপ্রেম” লাভ করা!
“কৃষ্ণবিষয়ক প্রেমা-পরমপুরষার্থ।
যার আগে তৃণতুল্য চারি পুরুষার্থ॥”
আমরা ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ এই চার পুরুষার্থ লাভকে প্রয়োজন মনে করি কিন্তু “পরম পুরুষার্থ” (পঞ্চম পুরুষার্থ) “”কৃষ্ণপ্রেম”” -এর কাছে এই চার পুরুষার্থ তৃণসম অর্থহীন। কৃষ্ণপ্রেমের আনন্দ একটি অমৃতের সমুদ্রের মতো, যার তুলনায় ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষের আনন্দ এক বিন্দুর মতোও নয়।
- তুলসী মালার তিন প্যাঁচ “স্বত্ব, রজ ও তম” -এই তিন গুণের ভারসাম্যকে নির্দেশ করে।
- তুলসীমালার এই তিন প্যাঁচ “সৃজন, পালন ও সংহার (সৃষ্টি,স্থিতি, লয়) তত্ত্বের অধিপতি ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরকে” নির্দেশ করে।
- তুলসী মালার এই তিন প্যাঁচ পবিত্র তীর্থ “গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী “নদীর স্রোতকে নির্দেশ করে
- তুলসীমালার এই তিন প্যাঁচ “ব্রহ্ম (“ওঁ”যোগীর কাছে), পরমাত্মা (জ্ঞানীর কাছে), ও ভগবান (ভক্তের কাছে)” এই তিন তত্ত্বকে নির্দেশ করে।
- তুলসীমালার এই তিন প্যাঁচ “বৈধী ভক্তি, রাগানুগা ভক্তি, ও রাগাত্মিকা ভক্তি “এই তিন প্রকার ভক্তিকে নির্দেশ করে।
- তুলসীমালার এই তিন প্যাঁচ “শ্রীভগবান, ভক্তি আর ভক্ত” এই তিন তত্ত্বকে নির্দেশ করে যার মধ্যে ভেদ নেই।
- তুলসীমালার এই তিন প্যাঁচ “গুরু, বৈষ্ণব আর ভগবান”-এই তিন তত্ত্বকে নির্দেশ করে।
- তুলসীমালার এই তিন প্যাঁচ “গৌর, নিত্যানন্দ ও অদ্বৈত এই তিন বিষ্ণুতত্ত্বকে নির্দেশ করে।
- তুলসীমালার এই তিন প্যাঁচ সেব্য (প্রভু), সেবক (দাস)ও দুইজনের মধ্যে সম্বন্ধকে নির্দেশ করে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে তুলসী মালা সর্বদাই তিন প্যাঁচ দিয়ে গলায় ধারণ করা উচিত। যারা এক প্যাঁচ দিয়ে ধারণ করেন, তারা শাস্ত্রের নিয়মকে অমান্য করেন, তা দোষযুক্ত। যারা তিন প্যাঁচের বেশি প্যাঁচ দিয়ে ধারণ করেন, তা তাঁদের নিজস্ব ভাব, তাতে দোষ নেই।